ll কার সাহায্য ছাড়া কাজী নজরুল ইসলাম আজ পরিচিতিই পেতেন না? জানুন এক অজানা কাহিনী ll

2 years ago
1

#কাজী_নজরুল_ইসলাম #কাজী_নজরুল_ইসলামের_অজানা_কাহিনী
#স্বপ্নসায়র

বন্ধুরা, কাজী নজরুল ইসলামের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধার্ঘ তাঁরই জীবনের কিছু অজানা ফুলের ডালি। আসুন আপনাদের সকলের সঙ্গে আজ সেটি শেয়ার করে নিই। আমাদের নতুন সিরিজ ''সূর্য ওঠার আগে' র আজ দ্বিতীয় পর্ব।
লিখনে পলাশ হালদার। প্রয়োজনে পরিবর্তন ও পরিবর্ধনে স্বপ্নসায়র।

দারোগা সাহেব প্রতিদিন সকালে হাঁটতে হাঁটতে আলী সাহেবের চায়ের দোকানে আসেন। সেখানে চা ও রুটি খেয়ে তারপরেই থানায় ঢোকেন। এটা তার প্রতিদিনের অভ্যাস। সেদিনও তিনি এসে বললেন -" কি মিঞা, রুটি হয়েছে? নাকি আজও...."
- বেশিক্ষণ লাগবে না স্যার‌। আপনি ততক্ষণে চা খান। রুটির আটা মাখা হচ্ছে, এখনই হয়ে যাবে।
কথাটা দারোগা সাহেব আজ প্রথম শুনছেন না। আসলে তিনি যে সময় দোকানে আসেন তার বহু আগে চা দোকান খুলে যায়। অনেকেই চা পান করেন। কিন্তু এত সকালে রুটি তেমন কেউ খান না। তাই একটু দেরীতেই রুটি তৈরি করেন আলী সাহেব। দোকানের বেঞ্চে বসে দারোগাবাবু চা খাচ্ছেন। হঠাৎ তার পাশে পড়ে থাকা একটা পুরানো খাতার দিকে চোখ গেল। সেটা দেখে বললেন -"তোমার দোকানের ধার বাকির খাতাটা এখানে পড়ে আছে, এটা গুছিয়ে রাখো মিঞা।"
- না স্যার, ওটা আমার দোকানের খাতা নয়।
- তাহলে?
- ওই যে ছেলেটা আটা মাখছে, ওর খাতা। সময় সুযোগ পেলে কী সব লেখে ওই জানে।
দারোগাবাবু তাকালেন রুটির আটা মাখতে থাকা ছেলেটির দিকে। কত আর বয়স হবে? তেরো কি চৌদ্দ। লম্বা লম্বা চুল, গোল গোল চোখ। সেই দৃষ্টির মধ্যে যেন একটা মায়া আছে। আর যেভাবে সে আটা মাখছে মনে হয় সুযোগ পেলে সমগ্র পৃথিবীটাকে এভাবেই ভেঙে চুরমার করে দিয়ে আবার নতুন করে পৃথিবী বানাবে। ছেলেটিকে তিনি বললেন -"ওহে খোকা, অনেক মেখেছো, এবার তাড়াতাড়ি রুটি বানাও। আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।"
বলে তিনি পাশের খাতাটার একটা পাতা ওল্টালেন। দেখলেন ছড়ার মতো কী সব লেখা কিন্তু পড়তে গিয়ে চমকে উঠলেন! একটা তেরো চৌদ্দ বছরের ছেলের পক্ষে তো এটা লেখা সম্ভব নয়! আরও কয়েকটা পাতা ওল্টাতে তার বিস্ময় আরও বেড়ে গেল! তিনি দোকানদারকে জিজ্ঞাসা করলেন - "এগুলো কি ওই ছেলেটা লিখেছে?"
- আগে হ্যাঁ। ও তো আগে লেটো দলে গান করতো। শুনে শুনে মুখস্ত করে রেখেছিল হয়তো....
- না মিঞা, এগুলো তো লেটো দলের গান নয়। এ তো আগুন ঝরানো লেখা! কোনোদিন পড়োনি?
- না স্যার, অত সময় কোথায়? ছেলে ছোকরা কোথায় কী লিখছে অত দেখার সময় হয়ে ওঠে না। কেন স্যার ভুল কিছু লিখেছে?
বেঞ্চ থেকে উঠে দাঁড়ালেন দারোগা সাহেব। ধীরে ধীরে এগিয়ে গেলেন ছেলেটির কাছে। তাকে এগিয়ে যেতে দেখে ছেলেটি কিঞ্চিৎ ভয় পেল। সে কি কোনো অন্যায় করেছে! মুখ তুলে তাকালো দারোগা সাহেবের দিকে। সে চোখে কত গভীর জিজ্ঞাসা! দারোগা সাহেব বেশ গম্ভীর স্বরে জিজ্ঞাসা করলেন -"খাতায় যেগুলো লেখা, সেগুলো কি তুমি লিখেছ?"
- জী স্যার।
- এগুলো তুমি কার কাছ থেকে শিখেছ?
- কারও কাছ থেকে নয় স্যার, আমার মনে যা আসে তাই লিখি।
- শুনলাম আগে নাকি লেটো দলে গান করতে?
- জী।
- তাহলে তোমার গানও তো শুনতে হয় একদিন...
ওদিকে চা করতে করতে আলী সাহেব চিৎকার করে উঠলেন -"কী রে বেটা, তুই কি স্যারের সাথে শুধু বকবক করতে থাকবি? মুখে কথা বল, সাথে হাতে কাজটা তো কর। স্যারের দেরি হয়ে যাচ্ছে না?"
- জী চাচা।
বলেই ছেলেটি দারোগা সাহেবের সাথে কথা বলা বন্ধ করে রুটি বেলতে শুরু করলো।

বাকিটা ভিডিওতে পাবেন।।

Loading comments...