Premium Only Content
ll মদন মোহন মন্দির ll কলকাতা ll বাড়ির পাশেই ( পর্ব দশম)
"দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ঘাসের আগার উপর
একটি শিশির বিন্দু"
------ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
তাই আমরা 'টোটো কোম্পানি'র তরফে শুরু করেছি নতুন এপিসোড 'বাড়ির কাছেই'। যেখানে খুব কম খরচে একদিনে বা একবেলায় ঘুরে আসা সম্ভব। আর তাছাড়া বাড়ির কাছেই এই বিন্দু বিন্দু মুক্তকণা সংরক্ষণ করা আমাদের কর্তব্য। তাই চলুন দেখে নেওয়া যাক আজকের পর্ব! আজ দশম পর্ব। গন্তব্য 'মদন মোহন মন্দির' ! কলকাতা।
চিৎপুর রোডের রাজবল্লভ পাড়ার সিদ্ধেশ্বরী কালীবাড়ি ছাড়িয়ে একটু এগোলেই মদনমোহন মন্দির।
সুবিশাল ঠাকুরবাড়িটির মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকে সামনেই সুউচ্চ তিনতলা সমান পাকা থামওয়ালা চাঁদনী (canopy)। মিত্রবাড়ির মতানুযায়ী এটি এশিয়ার সর্ববৃহৎ চাঁদনী। জানা যায়, একসময়,এখানে রোজ তিনশো কাঙালী ভোজনের বন্দোবস্ত থাকত। ডানদিকে সিঁড়ি উঠে গেছে সর্বসাধারণের, দোতলার দরবার হলে যাওয়ার জন্য। সামনের। প্রশস্ত চত্বরে ঐ চাঁদনী, তার চারদিক ঘিরে ঠাকুরবাড়ি। অন্দরের সিঁড়ি দিয়ে দোতলায় উঠে ঢুকলাম মন্দিরে। সুদৃশ্য সিংহাসনে অধিষ্ঠিত, ফুলের সাজে সুসজ্জিতমদনমোহন। সাথে রাধিকা। রয়েছেন গোকুল কন্যা বিষ্ণুপ্রিয়াও।
এই মন্দিরের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে। যা বিষ্ণুপুরের মদন মোহন মন্দিরের সঙ্গে জড়িত।
বিষ্ণুপুরের মল্লরাজবংশের পরাক্রান্ত রাজা বীর হাম্বীর গিয়েছিলেন মৃগয়ায়। রাতে বিশ্রাম নিতে আশ্রয় নিলেন এক তান্ত্রিকের কুটিরে। নজরে পড়লো এক অপুর্ব রাধামাধব মূর্তি। চোখ ফেরাতে পারলেন না। মনে মনে ঠিক করে ফেললেন হস্তগত করবেন এই বিগ্রহ। ভোররাত্রে তান্ত্রিক যখন নিদ্রামগ্ন, হাম্বীর মল্ল বিগ্রহ নিয়ে চলে এলেন বিষ্ণুপুরে। প্রতিষ্ঠা করলেন মদনমোহনের। বিষন্ন তান্ত্রিক হাজির হলেন রাজদরবারে। ফেরত চাইলেন বিগ্রহ। কোনওমতেই রাজী হলেন না রাজা। বললেন ধনসম্পত্তি যা চাও নিয়ে যাও, মদনমোহনকে দেব না। প্রিয় দেবতাকে হারিয়ে হতাশ সাধক দিলেন অভিশাপ – যার জন্য তুমি আজ আমার চোখের জল ফেলালে, আমার ঘর খালি করে দিলে, একদিন ঠিক এমনই একটি দিন আসবে তোমার পরিবারে। মদনমোহন রইলেন বিষ্ণুপুরে। কত কাহিনী তাঁকে নিয়ে। ক্রমে দিনকাল পেরোল অনেক। একে একে ওলন্দাজ, পর্তুগিজ, ব্রিটিশ বণিকেরা পা রাখছে এদেশে। ভাগীরথীর তীরে গড়ে উঠছে কুঠি। চলছে নবাবী আমল এই বাংলায়। সুতানুটি অঞ্চলে, আজকের বাগবাজারে পত্তনি গড়লেন মৈথিলী কায়স্থ গোকুল চন্দ্র মিত্র। মল্ল রাজারা তখন সকল জৌলুস হারিয়ে পড়েছেন অর্থাভাবে। কথিত যে, তৎকালীন রাজা চৈতন্য সিংহ স্বপ্নাদেশ পেলেন মদনমোহনের, বাগবাজারে গোকুল মিত্রের কাছে তাঁকে জমা রেখে যেন কর্জ নেওয়া হয়। তাই করলেন রাজা।
মদনমোহন চলে এলেন বাগবাজারে। গোকুল চন্দ্র মিত্রের সুরম্য ঠাকুরবাড়ীতে হলেন অধিষ্ঠিত। এখানে ঘটল আর এক ঘটনা। গোকুল চন্দ্রের বালবিধবা কন্যা বিষ্ণুপ্রিয়া থাকেন মদনমোহনকে নিয়েই। পূজা ক্রমে পরিণত হল প্রেমে। এমনই এক সময়ে চৈতন্য সিংহ ফিরলেন বাগবাজারে। ধার শোধ করে নিয়ে যাবেন পরিবারের ঠাকুর মদনমোহনকে।
ভেঙে পড়লেন বিষ্ণুপ্রিয়া। জানালেন, মদনমোহন আর শুধুই বিগ্রহ নন তাঁর কাছে। হৃদয় বিনিময় হয়েছে তাঁদের। মদনমোহন তাঁর স্বামী। মদনমোহনকে ছেড়ে তিনি বাঁচবেন না। নিমরাজী গোকুল চন্দ্রও। শেষে চিন্তাভাবনার পর তিনি কিছুটা ছলনার আশ্রয় নিলেন। কিছুটা মদনমোহনেরই আদলে আরেকটি মূর্তি বানিয়ে তিনি রাজাকে বললেন, নিজের জিনিস নিজে চিনে নিয়ে যাও। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস, চৈতন্য সিংহ চিনতে করলেন ভুল।
বিষ্ণুপুরে ফিরে যাওয়ার পথে জানতে পারলেন সত্য। ফিরে এসে চাইলেন আসল ঠাকুর। কিন্তু অবশেষে তা আর হল না। একটি স্বপ্নাদ্য নির্দেশ আর সেই তান্ত্রিকের অভিশাপের পরিণতি, বরাবরের জন্য মল্ল বীর হাম্বীরের দলমাদল কামানখ্যাত মদনমোহন ঠাকুর হয়ে গেলেন কলকাতার বাসিন্দা।
সুপরিসর পুজাঘরের সামনেই দরবার হল। এখন লোহার গ্রিলের বিভাজন দু’ঘরের মাঝে। নিরাপত্তার কারণেই। পুজাঘরের একপাশে ভোগ ঘর, ছোট বারান্দা পার হয়ে বিশ্রামঘর, তার আর এক পাশেই আবার দরবার হল।
ঠাকুর চলেন একমুখী। খাওয়া শোওয়ার সময় হলে, সিংহাসন থেকে নেমে চলেন ভোগঘরে। তারপর বিশ্রাম কক্ষে। সেখানে আছে শৃঙ্গার শয়নের প্রসাধনের আযোজন। বিশ্রামশেষে আরএক দরজা দিয়ে তিনি দরবার ঘুরে আবার ওঠেন সিংহাসনে।
গোকুল মিত্র ও তাঁর উত্তরসূরীরা ছিলেন অতুল প্রতিপত্তিশালী। মন্দিরের দোতলার টানা প্রশস্ত বারান্দার একদিকে বিশাল ভাঁড়ারঘর। এত বড় ভাঁড়ার বা store room কলকাতায় হয়ত আর কোথাও নেই। তারপর অতিথিশালা। তারপর আবার একটি সিঁড়ি নেমে গেছে একতলার ঝুলনমঞ্চে। বেশ কয়েকধাপ সিঁড়ি দিয়ে উঠে একতলার মার্বেলবাঁধানো ঝুলনমঞ্চ। সুরম্য খিলেনের মঞ্চের মাঝে সুন্দর সিংহাসনে বসানো দোলনা। একতলায় একদিকে বিশাল রসুইঘর বা kitchen। আর একদিকে কাছারি বা office। দোতলায় আছে নাচঘর অর্থাৎ banquet- এখন সেখানে বসে গানবাজনার আসর। এ যেন এক রাজ্যপাট মদনমোহনের।
মূল ঠাকুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে মদনমোহনের গলি দিয়ে চিত্তরঞ্জন এভিনিউ এর দিকে যেতে, আছে রাসমঞ্চ। আজ মনে হল কিছুটা অবহেলিত। শুধু রাস উৎসবের সময় সাফসুতরো হয়ে সেজে ওঠে।
বছরভর নানা অনুষ্ঠান চলে মন্দিরে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঝুলনযাত্রা, রাস ও শ্যামাপূজার পরদিন অন্নকূট। অন্নকূটে আয়োজন থাকে অগুন্তি পদের। ভাত, ছয়-সাত রকমের ডাল, নানা ধরণের তরকারী; চাটনি হয় একত্রিশ রকমের। হাজার মানুষ ভীড় জমায় একতলার চত্বরে। পেতে ধরে কাপড়, গামছা, এমনকি উল্টো করে ধরা খোলা ছাতাও। দোতলার বারান্দা থেকে ছোঁড়া হয় প্রসাদী অন্ন। হুড়োহুড়ি পড়ে যায় তার এককণা সংগ্রহ করবার জন্য।
সব মিলিয়ে শহর কলকাতার ব্যস্ত অঞ্চলের এক কোণে আজও যেন তিনশো বছর আগের এক স্মৃতি উসকে দিয়ে বিরাজমান বাঙালীর ইতিহাসের, সংস্কৃতির অনন্য এক নিদর্শন মদনমোহন মন্দির।
মাধব মিত্র মশাইয়ের বাড়ি যাওয়ার পথে গলির মুখের বাড়িটিও বাঙলার সংস্কৃতির জগতে বিশিষ্ট। এটি রসগোল্লার স্রষ্টা নবীন চন্দ্র। দাশের বাড়ি। মিষ্টান্ন জগতের অবিষ্মরণীয় পরিবার নবীন চন্দ্র দাশ, কে. সি. দাশ। এনাদের পরিবারের বাস এখানেই।
#মদন_মোহন_মন্দির #কলকাতা #বাগবাজার #বাড়ির_পাশেই
-
2:51:00
Fresh and Fit
7 hours agoWomen Claim To Give Better Dating Advice So We Did THIS...
115K65 -
5:16:50
CHiLi XDD
8 hours ago[F EM UP Friday] Take # 2 [Destiny 2] Lets Kick Some A$$! #RumbleTakeOver
37.3K1 -
5:13:43
ItsMossy
14 hours agoHALO WITH THE RUMBLERS (: #RUMBLETAKEOVER
34.2K1 -
1:54:08
INFILTRATION85
7 hours agoHi, I'm INFILTRATION
34.2K9 -
7:51:03
GuardianRUBY
9 hours agoRumble Takeover! The Rumblings are strong
72.3K3 -
4:28:45
Etheraeon
16 hours agoWorld of Warcraft: Classic | Fresh Level 1 Druid | 500 Follower Goal
51.1K -
3:17:21
VapinGamers
8 hours ago $3.73 earned🎮🔥Scrollin’ and Trollin’: ESO Adventures Unleashed!
34.9K2 -
LIVE
a12cat34dog
10 hours agoGETTING AFTERMATH COMPLETED :: Call of Duty: Black Ops 6 :: ZOMBIES CAMO GRIND w/Bubba {18+}
277 watching -
8:23:18
NubesALot
12 hours ago $5.29 earnedDark Souls Remastered and party games
30.3K -
3:03:42
GamersErr0r
1 day ago $2.20 earnedits not what you think
24.7K1